Saturday, May 18, 2024
Thursday, May 16, 2024
অজু করার দোয়া ও অযুর ফরজ গুলো জেনে নিন।
অজু কাকে বলে?
অজু পবিত্রতা অর্জন ও নামাজ আদায়ের মাধ্যম। হাদিসে অজুকে নামাজের চাবি আখ্যা দেওয়া হয়েছে। অজুর আভিধানিক অর্থ- সৌন্দর্য, পরিষ্কার ও স্বচ্ছতা। শরিয়তের পরিভাষায় পবিত্রতা অর্জনের নিয়তে নির্দিষ্ট অঙ্গসমূহে বিশেষ নিয়মে পানি ব্যবহার করাকে অজু বলে। অজুর বিধান সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘হে মুমিনরা! যখন তোমরা নামাজের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমাদের মুখ ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং মাথা মাসেহ করবে আর পা টাখনু (গ্রন্থি) পর্যন্ত ধৌত করবে...।’ (সুরা মায়েদা: ৬)
অজু করার দোয়া নিয়তঃ
অর্থ: পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। অজু করার সময় এ দোয়াটি পড়তে থাকা- اَللَّخُمَّ اغْفِرْلِىْ ذَنْبِى وَ وَسِّعْلِىْ فِىْ دَارِىْ وَبَارِكْ لِىْ فِىْ رِزْقِىْ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসিলি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফি রিযক্বি। (নাসাঈ)
অর্থ: 'হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও।
অযু কত প্রকার ও কি কি?
অজু তিন প্রকার: ফরজ, ওয়াজিব এবং মুস্তাহাব। নামাজের জন্য অজু ফরজ। কাবা শরিফ তওয়াফের জন্য অজু করা ওয়াজিব। গোসল ও ঘুমানোর আগে অজু করা মুস্তাহাব।
অযুর ফরজ চারটি:
- মুখমণ্ডল পরিষ্কার করা
- দুই হাতের কনুইসহ কব্জি পরিষ্কার করা
- মাথা মসেহ করা
- দুই পায়ের টাখনুসহ গোড়ালি পরিষ্কার করা
অজুর উপকারিতা
পাপের প্রভাব দূর : অজু শুধু মানুষের পাপগুলো দূর করে না; বরং দেহ-মন থেকে পাপের প্রভাব ও গ্লানি দূর করে দেয়।
মহানবী (সা.) বলেন, 'কোনো মুসলিম কিংবা মুমিন বান্দা অজুর সময় যখন মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলে তখন তার চোখ দিয়ে অর্জিত গুনাহ পানির সঙ্গে বা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায়।
অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি?
- এক. পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া
- দুই. রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। ( হেদায়া : ১/১০)
- তিন. মুখ ভরে বমি করা
- চার. থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া
- পাঁচ. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া
- ছয়. পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে
- সাত. নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে
Monday, May 13, 2024
কুরবানির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয় মাসায়ালা - কুরআন ও হাদিসের আলোকে
কুরবানির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয় মাসায়ালা কুরআন হাদিসের আলোকে।
কুরবানির পরিচয়ঃ
কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলতঃ
কোরবানির ইতিহাসঃ
কুরবানির নেসাব ও তার মেয়াদঃ
কুরবানির পশুর বিধানঃ
কুরবানির পশু ও তার বয়সঃ
যে সমস্ত ত্রুটিযুক্ত পশু কুরবানী করা জায়েয নয়ঃ
কুরবানির পশু জবেহর সময়ঃ
কুরবানির পশু হারিয়ে গেলে বিধানঃ
কুরবানির পশু জবেহ করার নিয়মঃ
কুরবানির গোশতের হুকুমঃ
Sunday, May 12, 2024
নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯ টি? জেনে নিন - Islamer-Bani24
নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯ টি? জেনে নিন
নামাজ সঠিক হওয়ার জন্য যেমন কিছু নিয়ম রয়েছে। তেমনি নামাজ এমন কিছু কাজ আছে যা করলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯ টি?
আজ এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন নামাজ ভঙ্গের কারণ কি কি?
যে সকল কারণে নামাজ ভঙ্গ হয় বা নামাজ নষ্ট হয় তাকে বলে “মোফছেদাতে নামাজ”।
নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯ টি
আমরা মুসলিম আর একজন মুসলিম হিসাবে আমাদের প্রতিটি মুসলিম মানুষের উচিৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। কারণ মৃত্যুর পরে আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন।
আমরা মুসলিম ঠিকই, নামাজও আদায় করি ঠিকই। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা সঠিক ভাবে নামাজ আদায় করতে এখনও পারেন না। কিনবা নামাজ ভঙ্গের কারণ সমূহ জানেন না।
আজ এই পোস্টটি ওই সকল মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য। তাই দেরি না করে এখনই পোস্টটি পড়ে নিন। জেনে নিন আপনাদের অনেক না জানা তথ্য। বিস্তারিত পড়ে দেখবেন অবশ্যই।
নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ
১) নামাজে অশুদ্ব তেলাওয়াত করা।
২) নামাজের ভিতর কথা বলা।
৩) কোনো লোককে সালাম দেওয়া।
৪) সালামের উত্তর দেওয়া।
৫) বিনা কারণে উঃ! আহ্ শব্দ করা।
৬) বিনা কারণে কাশিঁ দেওয়া।
৭) আমলে কাছির করা।
৮) বিপদে বা ব্যথায় শব্দ করে কাদাঁ।
৯) তিন তাছবিহ পরিমাণ সময় ছতর খুলে থাকা।
১০) মুকতাদি ব্যথিত অপর লোকের লোকমা নেয়া।
১১) সুসংবাদ ও দুঃখ সংবাদের উত্তর দেওয়া।
১২) নাপাক জায়গায় সিজদা দেওয়া।
১৩) কিবলার দিক হইতে ছিনা ফিরিয়ে নেওয়া।
১৪) নামাজে কোরআন দেখে পড়া।
১৫) নামাজে কোনো কিছু খাওয়া ও পান করা।
১৬) নামাজে শব্দ করে হাসা।
১৭) নামাজে হাঁচির উত্তর দেওয়া।
১৮) নামাজে দুনিয়াবি কোনো কিছু প্রার্থনা করা।
১৯) ইমামের আগে মুকতাদি দাড়ানো।
নামাজ ভঙ্গের বিস্তারিত কারণ ১৯ টি নিম্নে দেওয়া হলোঃ
১. নামাজ অশুদ্ধ ভাবে পড়া।
যেমনঃ নামাজের ভেতর কিরাতে যদি আপনার এমন পরিবর্তন হয়, যার ফলে কোরআনের অর্থ ও উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ পাল্টে যায়, তাহলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে, আবার নতুন করে আদায় করতে হবে।
২. নামাজের ভেতর কথা বলা।
যেমনঃ নামাজে এমন কোনো অর্থবোধক কথা বললে, যা সাধারণ কথার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তাহলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। নতুন করে আবার আদায় করতে হবে।
৩. কোনো লোককে সালাম দেওয়া।
যেমনঃ নামাজ আদায় অবস্থায় কোনো লোককে সালাম দিলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
৪. সালামের উত্তর দেওয়া।
যেমনঃ সালাম অর্থ শান্তি। প্রতিটি মুসলমানের উচিৎ একজন আরেক জনের সাথে দেখা হলে প্রথমে সালাম দেওয়া। কিন্তু নামাজরত অবস্থায় কারো সালামের উত্তর দিলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
৫. উহ্-আহ্ শব্দ করা।
যেমনঃ নামাজরত অবস্থায় কোনো ব্যথা কিংবা দুঃখের কারণে উহ্-আহ্ শব্দ করলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। তাই নামাজরত অবস্থায় উহ্-আহ্ শব্দ করা যাবে না।
৬. বিনা ওজরে (কারণে) কাশি দেওয়া।
যেমনঃ নামাজ হলো শ্রেষ্ঠ ইবাদত। প্রতিটি মুসলমানদের উচিৎ মন দিয়ে ভালো ভাবে আল্লাহর ইবাদত করা। যদি কেউ নামাজে দাঁড়িয়ে অপ্রয়োজনে কাশি দেয়। তাহলে অপ্রয়োজনে কাশি দেওয়ার দ্বারাও নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
৭. আমলে কাসির করা।
যেমনঃ কোনো মুসল্লি এমন কাজে লিপ্ত হওয়া, যার কারণে দূর থেকে কেউ দেখলে তার মনে প্রবল ধারণা জন্মে যে ওই ব্যক্তি নামাজরত নয়। তাদের তার নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
৮. বিপদে কিংবা বেদনায় শব্দ করে কাঁদা।
যেমনঃ কোনো বিপদ কিংবা দুঃখের কারণে শব্দ করে কাঁদলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
৯. তিন তাসবিহ পরিমাণ শরীর খুলিয়া থাকা।
যেমনঃ নাভির নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত শরীরের কোনো স্থান যদি তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় অনাবৃত থাকে, তাহলে তার নামাজ হবে না। তাই যদি কোনো ব্যক্তির গেঞ্জি, শার্ট ও প্যান্ট নাভির নিচ থেকে রুকু সিজদার সময় সরে গিয়ে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় এভাবে অতিবাহিত হয়, তাহলে তার নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
নারীদের মাথা ও সতর ডাকা। কোনো কারণে মাথার ওড়না সরে গেলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারী ওড়না ছাড়া নামাজ আদায় করলে আল্লাহ তার নামাজ কবুল করেন না।
১০. মুক্তাদি ছাড়া অন্য ব্যক্তির লোকমা লওয়া।
যেমনঃ ইমাম সাহেব কিরাতে ভুল করছেন, সঙ্গে সঙ্গে নামাজের বাইরের কোনো লোক লোকমা দিলে তা গ্রহণ করলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯ টি
১১. সুসংবাদ বা দুঃসংবাদে উত্তর দেওয়া।
যেমনঃ সুসংবাদ অথবা দুঃসংবাদের উত্তর দেওয়া দুনিয়ার কথার সাথে নামাজরত অবস্থায় শামিল হলে, এর দ্বারা নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
১২. নাপাক জায়গায় সেজদা করা।
যেমনঃ নামাজের জায়গা পবিত্র না হলে নামাজ হবে না। নামাজের জায়গা পবিত্র হওয়া জরুরি। নামাজ আল্লাহর শ্রেষ্ঠ ইবাদত। অর্থাৎ নামাজ পড়ার সময় নামাজি ব্যক্তির শরীর যেসব জায়গা স্পর্শ করে, সে জায়গাগুলো পবিত্র হওয়া, যা নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য অপরিহার্য শর্ত। তাই অপবিত্র জায়গায় সেজদা করলে নামাজ হবে না নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
১৩. নামাজের মধ্যে কিবলার সিনা ঘুরে যাওয়া।
যেমনঃ নামাজরত অবস্থায় কোনো কারণে সিনা কিবলা থেকে ঘুরে গেলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। তবে যানবাহনের ক্ষেত্রে আলাদা।
১৪. নামাজে শব্দ করে হাসলে।
যেমনঃ নামাজে শব্দ করে হাসলে ওজু ভেঙে যায়। আর ওজু ভেঙে গেলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
১৫. নামাজে কোরআন দেখে পড়লে।
যেমনঃ নামাজরত অবস্থায় কোরআন দেখে দেখে পড়লে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
১৬. নামাজে সাংসারিক কোনো বিষয় প্রার্থনা করলে।
যেমনঃ নামাজরত অবস্থায় সাংসারিক কোনো দোয়া করলে হানাফি মাজহাব মতে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। তবে এ মাসআলার ক্ষেত্রে অন্য মাজহাবের ভিন্নমত আছে।
১৭. নামাজে হাঁচির উত্তর দেওয়া।
যেমনঃ নামাজরত অবস্থায় কারো হাসির উত্তর দেওয়া কথা বলার নামান্তর। যদি কেউ নামাজরত অবস্থায় হাসির উত্তর দেয় এর দ্বারা তার নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
১৮. নামাজে খাওয়া বা পান করা।
যেমনঃ যদি কেউ কিছু খায় বা পান করে তা যদি দাতে আটকে থাকা খাদ্য জিহবা দিয়ে বের করে খেয়ে ফেলে। উক্ত খাদ্য চানাবুটের চেয়ে ছোট হয় তাহলেও নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
১৯. ইমামের আগে মুক্তাদি দাঁড়ানো।
যেমনঃ মুক্তাদির পায়ের গোড়ালি ইমামের আগে চলে গেলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। যদি মুক্তাদি ইমামের পায়ের গোড়ালির পেছনেই দাঁড়ায়, কিন্তু তিনি লম্বা হওয়ার কারণে তাঁর সিজদা ইমাম সাহেবকে অতিক্রম করে যায়, তাহলে তাঁর নামাজের কোনো ক্ষতি হবে না।
নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯ টি
আমরা সকলেই জানি এক মাত্র নামাজের মাধ্যমে দুনিয়ায় ও আখেরাতে কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব। তাই আমাদের সকলের উচিৎ জেনে বুঝে ভালো ভাবে নামাজ আদায় করা।
আজ এই পোস্টটি পাড়ার পরে আশা করি আর কোনো সমস্যা থাকবে না আপনাদের নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ নিয়ে। আজই এইসকল কাজ নামাজরত অবস্থায় পরিহার করুন। নামাজ সহীহ শুদ্ধ করুন। ইনশাআল্লাহ কবুলের মালিক আল্লাহ।
Wednesday, May 8, 2024
সঠিকভাবে নামাজ আদায়ের নিয়ম - Islamer-Bani24
নামাজের নিয়মাবলী
মুসলিমদের নামাজ পড়ার নিয়ম কুরআন ও হাদীস হতে এসেছে। কুরআনে এর বিশদ বিবরণ অন্তর্ভূক্ত হয় নি, তাই নামাজের নিয়মের ক্ষেত্রে হাদীসকে অনুসরণ করা হয়।
নিয়ম
নামাজের প্রধান ধাপগুলোকে 'রাকাত' বলা হয়। নামাজ দুই বা তিন বা চার রাকাত হতে পারে। ইসলামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ে নামাজ পড়ার রীতিতে কিছু পার্থক্য রয়েছেঃ শিয়া ও সুন্নি পার্থক্য পাশাপাশি সুন্নিদের মধ্যে মাজহাবী পার্থক্য ও লা মাজহাবী তথা আহলে হাদীস বা সালাফী পার্থক্য।
নামাজ আরবিতে পড়ার কারণ
আহমেদ হুসাইন শরীফ তার "হোয়াই প্রে ইন এরাবিক" (নামাজ কেন আরবিতে পড়া হয়?) বইতে আরবিতে নামাজ পড়ার পেছনে যে সকল কারণ বলেছেন তা হল,
- আরবি হল একটি গভীর ও বিস্তৃত ভাষা
- নামাজের জন্য একটি সাধারণ ও সার্বজনীন ভাষা
- (আরবির মাধ্যমে) ইসলামী ভ্রাতৃত্বে সংযোগ স্থাপন।
- কুরআন হল আল্লাহর সৃজনকর্ম
- কুরআনের পূর্নাঙ্গ ও পরিপূর্ণ অনুবাদ করা অসম্ভব
- কুরআনই একমাত্র (ঐশীভাবে) সংরক্ষিত ওহী
- কুরআনের নিজস্ব ছন্দ রয়েছে
দোয়া এবং নামাজের পার্থক্য হলোঃ দোয়া হল আমন্ত্রণ বা মিনতি, যা ঐচ্ছিক, তাই তা শিথিল এবং তা যে কোন ভাষায় করা যায়, আর নামাজ হলো প্রার্থনা, যা বাধ্যতামূলক ও তার নীতিমালা কঠোর, এছাড়া জামাতে ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে মুসলিমদের সামাজিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত রাখারও বাধ্যবাধকতা রয়েছে, একারণে নামাজ শুধু আরবিতে পড়তে হয়।
আরবি নামাজ বুঝতে শেখা কঠিন কিছু নয় এবং তা সহজ।
পরিশেষে তিনি বলেন, "এইভাবে আমরা দেখতে পাই যে, নামাজের মাধুর্য, মর্যাদা, সৌন্দর্য এবং আধ্যাত্মিকতা মূল আরবীতে নামাজ পড়ার উপর নির্ভর করে; এবং যদি অনুবাদে নামাজ পড়া হয়, তবে কুরআনের সাহিত্যিক এবং শৈল্পিক মূল্যবোধ হারিয়ে যেতে বাধ্য; এবং অনূদিত নামাজের ফলে সর্বপ্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইসলামী ভ্রাতৃত্ব।
সুন্নি হানাফি নিয়ম
প্রথমে দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে নামাজ শুরু করতে হয়। তারপর সানা পড়তে হয়। সানা কেবল প্রথম রাকাতে পাঠ করতে হয়। প্রতি রাকাতে প্রথমে সুরা ফাতিহা ও অপর একটি সুরা বা অংশ বিশেষ পাঠ করতে হয়।
পশতুন মুসলিমরা ঈদের নামাজে রুকু করছেন, কান্দাহার, আফগানিস্তান।
এরপর রুকু করতে হয় অর্থাৎ হাঁটুতে হাত রেখে ভর দিয়ে পিঠ আনুভূমিক করে অবনত হতে হয়। রুকু থেকে দাঁড়িয়ে ছোটো একটা বিরতি দিয়ে সিজদা করতে হয়। সিজদা দুুইবার করতে হয়, আর দুটি সিজদার মাঝে ছোট্ট একটা বৈঠক করতে হয়। ঠিক একই ভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত সম্পূর্ণ করতে হয়।
দুই রাকআত নামাজের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাকাতের দুই সিজদা সম্পূর্ণ করার বসে যথাক্রমে "আত্তাহিয়াতু (তাশাহুদ)" ও "দরূদ শরীফ" ও "দোয়া মাসুরা" পড়তে হয়। অতঃপর প্রথমে ডানে ও পরে বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়।
তিন বা চার রাকাতের নামাজের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাকাতে সিজদার পর বসে তাশাহুদ ("আত্তাহিয়াতু") দোয়া পড়তে হয় এবং পাঠ শেষে দাঁড়িয়ে উঠে তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত পড়তে হয়। শেষ রাকাতের দুই সিজদা সম্পূর্ণ করার বসে যথাক্রমে "আত্তাহিয়াতু (তাশাহুদ)" ও "দরূদ শরীফ"ও "দোয়া মাসুরা" পড়তে হয়। অতঃপর প্রথমে ডানে ও পরে বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়।
পার্থক্য
নামাজের নিয়মে শিয়া ও সুন্নি পার্থক্য রয়েছে। আবার সুন্নিদের মধ্যে মাযহাবগত নামাজের পার্থক্য আছে, পাশাপাশি আহলুল হাদীস ও সালাফী সম্প্রদায় নামাজের নিয়মের ক্ষেত্রে সরাসরি কোরআন ও সহীহ হাদীসকে তথা সালাফকে সরাসরি অনুসরণ করে অন্যান্য সকল ব্যক্তির সাংঘর্ষিক মতামতকে বর্জন করার দাবি করে থাকে।
আহলে হাদীস/সালাফি পার্থক্য
নামাজের নিয়মে মাজহাব বা ঈমাম বা আলেমের যাচাইবিহীন অনুসরণ (তাকলিদ) না করে সহীহ হাদীস অনুসরণ করা
- নামাজের নিয়তে নির্দিষ্ট কোন দোয়া না পড়া
- নামাজে নাভির উপরে/বুকের উপর হাত বাধা
- সশব্দে আমীন বলা
- রুকুর আগে ও পরে এবং সিজদার আগে তাকবীরে হাত তোলা
- সিজদায় যাওয়ার সময় পায়ের আগে হাত রাখা
- সেজদা থেকে উঠে দাড়ানোর সময় হাতে ভর করে ওঠা
- তাশাহুদে তর্জনী আঙ্গুল ক্রমাগত নাড়ানো
- সিজদা সাহু নামাজ শেষে সালাম ফেরানোর পর করা
- তিন রাকাত বিতরে দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠকে না বসা
বিতরের নামাজে প্রচলিত হানাফি দোয়ায় কুনুতকে কুনুতে নাজেলা বা বিপদকালীন কুনুত দাবি করে তা বিপদ ছাড়া নিয়মিত না পড়া এবং সিহাহ সিত্তাহসহ সুন্নি হাদীসে বর্নিত অন্যান্য কুনুত পড়া
বিতর নামাজকে ওয়াজিব বলার ক্ষেত্রে কোন কোন আহলে হাদীস আলেমের ভিন্নমত পোষণ করা
ফরজ নামাজ শেষে সম্মিলিত মুনাজাত না করা
জুম্মার নামাজের খুতবার পূর্বে বা মসজিদে প্রবেশের সাথে সাথে সুন্নত পড়া ও তা চার রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত পড়া
মাগরিবের ফরজ নামাজের আগে মসজিদে প্রবেশের পর দুইরাকাত সুন্নত নামাজ পড়া বা পড়তে উৎসাহিত করা
অনারব দেশসমূহে জুম্মার নামাজে জনগণের বোধগম্য ভাষায় শুধুমাত্র একটি খুতবা দেওয়া, আলাদাভাবে আরবিতে খুতবা না দেওয়া
(পোষ্টটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন)